চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য

আজকে আর্টিকেলটি মূলত চট্টগ্রামের ইতিহাস কে কেন্দ্র করে। প্রাচীন যুগ থেকেই আমরা চট্টগ্রাম নামের সাথে পরিচিত। এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের সামনে জানাচ্ছি চট্টগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে।

কিভাবে চট্টগ্রামের নাম উত্থাপন হল, ব্রিটিশ ভারতীয় সময়ে চট্টগ্রামে কারা কারা এসে রাজত্ব করতেন এবং কারা এই এলাকা শাসন করতেন। চট্টগ্রাম নামকরণ কিভাবে হয়, চট্টগ্রামের বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ, চট্টগ্রামের অপর নাম এবং চট্টগ্রাম শহরের বিখ্যাত স্থান, চট্টগ্রাম এর বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্থান ইত্যাদি তথ্য এই আলোচ্য বিষয়ের মাধ্যমে উঠে আসবে। তাহলে বন্ধুরা, চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই। চট্টগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে। 

চট্টগ্রামের ইতিহাস

বাংলাদেশে যে কয়টি বিভাগ রয়েছে। তার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের সৌন্দর্য অনেক বেশি। চট্টগ্রাম বাংলাদেশের সাতটি বিভাগের মধ্যে সবচাইতে বেশি সৌন্দর্য বিচিত্র এবং বিশাল ইতিহাস সমৃদ্ধ একটি শহর। এখানে ভূ-প্রাকৃতিক এবং দৃশ্য যেমন রয়েছে। 

এছাড়া রয়েছে ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিতে চট্টগ্রামের আলাদা বৈশিষ্ট্য। এই বিভাগের অধিনে রয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষীপুর জেলা। আছে ঐতিহ্যগত বৈশিষ্ট্য। নিচে জেলা ভিত্তিক চট্টগ্রাম জেলার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হয়েছে। প্রথমে শুরু করব চট্টগ্রাম নাম কিভাবে আসলো। চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অনেক প্রাচীন কালের থেকে তা সবার জানা। 

ইতিহাসের শুরু থেকে চট্টগ্রাম আরাকানের অধিবাসীদের একটি বাসস্থান ছিল। সংস্কৃতিতেও আরাকানদের সাথে চট্টগ্রামবাসীদের বেশ মিল রয়েছে। সে সময় এখানকার রাজা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হওয়ায় এর প্রভাব এখনো যথেষ্ট রয়েছে। সুলতান, আফগান এবং মোগল আমলে আরাকানিদের সঙ্গে যুদ্ধ বিগ্রহ লেগে থাকত এ চট্টগ্রাম জেলাতে। সব শেষ হয়েছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম রয়েছে তাদের নাম এবং ইতিহাস নিয়ে। 

চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য

চট্টগ্রাম বর্তমান সংস্কৃতির উন্মেষ হয় ১৭৯৩ সালে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের পর থেকে চট্টগ্রামে বাণিজ্য করতে এসেছে। পর্তুগিজ, ফরাসি এবং নেদারল্যান্ডের আদিবাসী এসেছিল বাণিজ্য করতে। 

তবে শেষ পর্যন্ত আরাকান এর জলদস্যুরা চট্টগ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক বন্দোবস্তের পর ভারতীয় উপমহাদেশে সামাজিক, ধন সম্পদ, উৎপাদন, এবং পদ্ধতিগতভাবে আমুল পরিবর্তন হয়। এ সময় অন্যান্য স্থানের মত চট্টগ্রামের মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে।

ফলে ইতিহাস এবং ঐতিহ্য তে আসে বিপুল পরিবর্তন। এছাড়া সংস্কৃতিতে, গানে এবং পোশাক এ রয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন এবং ভাষাগত দিক রয়েছে রয়েছে অনেক পরিবর্তন। 

চট্টগ্রামের নামকরণের ইতিহাস

আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সামনে চট্টগ্রামের নামকরণের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করব। চট্টগ্রাম মূলত ১৭৯৩ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গোরা পত্তনের পর এই অংশের ইতিহাস পাল্টে যায়। 

চট্টগ্রামে নানা বৈচিত্র্যে ভরা। খ্রিস্টীয় দশক শতকের আগে চট্টগ্রাম নামের কোনো অস্তিত্ব ছিলনা। তবে দেখা যায় যে, প্রাচীন কাল থেকে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, মহাদেশের পরিব্রাজক এবং লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নামকরণের ইতিহাস সম্পর্কে। 

এ পর্যন্ত প্রায় চট্টগ্রামের আলাদা নাম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সূক্ষ্ম দেশ, রম্যভূমি, চাটগাঁও, চট্টলা, চক্রশীলা এবং পরশপুর, চিটাগংজ ৪টি নাম পাওয়া যায়। তবে এ নামগুলো সাথে অনেক মতভেদ এবং পার্থক্য রয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করেছি আপনাদের সামনে সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরার ট্রাই করব। 

চট্টগ্রামের বিখ্যাত ব্যক্তির নাম

চট্টগ্রামে যেমন রয়েছে সুন্দর সুন্দর পরিবেশ এবং পাহাড়। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ। আমরা নিশ্চয়ই নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নাম শুনেছি। তিনি হচ্ছেন চট্টগ্রামের জোবরা এলাকার বাসিন্দা। ইতিহাসে তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ব্রিটিশ ভারতীয় বিরুদ্ধে আন্দোলনের মূল নায়ক প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। 

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এর জন্ম চট্টগ্রামে। এছাড়া এমনি বিখ্যাত সংগীত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর জন্ম চট্টগ্রামের। এছাড়া বিখ্যাত ক্রিকেটার তামিম ইকবাল, পার্থ বড়ুয়া, প্রবাল চৌধুরী, মিনার রহমান,মিনা ইসলাম, সুবীর নন্দী, নাসির চৌধুরী, রবি চৌধুরী ইত্যাদি বিখ্যাত গায়কের জন্ম এই 

চট্টগ্রামে। এছাড়া এ চট্টগ্রামে রয়েছে বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কোভিদ আহমেদ, আব্দুল করিম, সাহিত্যিক  আবুল ফজল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের, বীর প্রতীক তাজুল ইসলাম, বীর প্রতীক নুরুল হক, বীর প্রতীক দিদারুল ইসলাম  সূর্যসেন বীর প্রতীক সিরাজুল হক এবং মোজাম্মেল হক অন্যতম। 

 চট্টগ্রামের ইতিহাস
চট্টগ্রামের বিখ্যাত স্থান

চট্টগ্রামের বিখ্যাত স্থান

এখন জেনে নেওয়া যাক চট্টগ্রামে বিখ্যাত এবং দর্শনীয় স্থানগুলো কি কি রয়েছে। চট্টগ্রামে পুরাতন জাহাজ ভাঙ্গা সহ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামে সীতাকুন্ডুতে চন্দ্রনাথ পাহাড়, খৈয়াছড়া ঝর্ণা, পতেঙ্গা সী বিচ, আরো অনেক। কিছু বলা যায় চট্টগ্রাম হচ্ছে প্রাকৃতিক নৈসর্গিক এর একটি বিখ্যাত এলাকা।

 এছাড়া রয়েছে জাতি তাত্ত্বিক জাদুঘর, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর, হালদা নদী, মোহনা, চট্টগ্রাম ইকোপার্ক. এখন জেনে নেওয়া যাক চট্টগ্রামের বিখ্যাত স্থান সম্পর্কে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার মোট ১৫টি উপজেলা রয়েছে.

চট্টগ্রাম জেলার উপজেলা সমূহ হচ্ছে: আনোয়ারা, বাঁশখালী, বোয়ালখালী, ফটিকছড়ি, চন্দনাইশ, হাটহাজারী, মীর সরিয়া, পটিয়া, রাঙ্গুনিয়া, সন্দীপ, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, রাউজান, কর্ণফুলী, সীতাকুণ্ড উপজেলা। আশা করি বন্ধুরা এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সামনে চট্টগ্রামের বিখ্যাত এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলো সম্পর্কে আলোচনা করতে পেরেছি। 

চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক স্থান

চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক স্থানে রয়েছে ভিন্নতা। এছাড়া এখানকার খাবার এবং সংস্কৃতিতে রয়েছে বিশাল পরিবর্তন। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সামনে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করব।

আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার উইলিয়াম জোন্স এর মতানুসারে, এই এলাকার একটি ক্ষুদ্র পাখির নাম অনুসারে চট্টগ্রাম নামের উৎপত্তি। 

আরাকানদের পরাজিত করে মোগল সম্রাট নাম রাখেন হচ্ছে ইসলামাবাদ। ১৭৬০ সালের আপনি মীর কাসিম আলি খান ইসলামাবাদকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করেন। এরপর থেকেই এই অঞ্চলটির নাম হয়ে যায় চিটাগং। 

চট্টগ্রামের শহরের দর্শনীয় স্থান

চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেমন বেশি। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ঐতিহাসিক স্থান। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সামনে চট্টগ্রাম এর ভিতরে দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করব। আর্টিকেলটি প্রথম থেকে পড়ে নিলে জানতে পারবেন।

চট্টগ্রাম শহরে যদি ঘুরতে যান, তাহলে অবশ্যই এসব জায়গা গুলো দেখতে ভুলবেন না। চট্টগ্রাম শহরের ভিতরে রয়েছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, চট্টগ্রাম বন্দর, জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর, ডিসি হিল, পতেঙ্গা, সমুদ্র সৈকত, ফাইলেক ব্যাটারি হিল, বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার, ভাটিয়ালি লেক এবং গলফ ক্লাব। 

রয়েছে লালদিঘি। এইসব মূলত চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান। আপনি যদি কোন সময় এখানে যান। তাহলে এগুলো দেখতে ভুলবেন না। 

চট্টগ্রাম শহরের ভিতর দর্শনীয় স্থান

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সামনে চট্টগ্রামের ইতিহাস এবং এর ভিতর দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। দেশের অন্যতম ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে চট্টগ্রামে রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস। 

তবে আমরা অনেকেই জানিনা প্রাকৃতিক এবং স্থাপত্য সংযোগ দিক থেকেও চট্টগ্রামের জুড়ি মেলা ভার। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সীতাকুন্ড উপজেলায় অবস্থিত ইকোপার্ক। প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা  এটা অনেকটা জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়ার মত। 

পার্কের বিভিন্ন অংশে রয়েছে বিভিন্ন কেন্দ্র  উদাহরণ হিসেবে বলা যায় প্রবেশ মুখে আমরা পেতে পারেন পাইন গাছের সারি বদ্ধ পথ। যা আপনার মনকে আরো বেশি সৌন্দর্যমন্ডিত করবে। এছাড়া রয়েছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত থেকে সরাসরি সূর্যাস্ত দেখতে পাওয়া যায় যা। যেন একটি স্বর্গীয় দৃশ্য। 

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অবস্থিত হয়েছে চন্দ্রনাথ পাহাড়। রয়েছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা  রয়েছে আরো সুন্দর সুন্দর দর্শনীয় স্থান। আপনারা চাইলে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে  ভ্রমণ করতে পারেন। 

আমি আপনাদের সামনে চট্টগ্রামের ইতিহাস এবং এর নামকরণ কিভাবে আসলো তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। চট্টগ্রামের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ অনুচ্ছেদ মনোযোগ দিয়ে পরবেন। 

আরো পড়ুন >>  বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রচনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *